রবিবার, ৭ আগস্ট, ২০১১

বুয়েটিয়ান স্মৃতি-২


শাহাদাৎ:

ক্যাফেতে প্রথমদিন ঢুইকাই যে ছেলেটা আমাদের দিকে ছুইট্টা আসে তার নাম শাহাদাৎ। বরিশাল বাড়ি। লম্বা মতন। লুঙ্গি পড়া। সাদা ময়লা শার্ট। পেটের কাছে দুইটা বোতাম আছে আর নাই।
-ছার কি লাগবো?
আমি হঠাৎ কইরা স্যার ডাক শুনে বেশ পুলকিত বোধ করলাম। ভালাই লাগলো। হঠাৎ করে একটা ভাব আইয়া পড়লো। টু-ওয়ান পর্যন্ত শাহাদাৎই আমাদের সার্ভ দিতো। শাহাদাৎ পাতলা ডাইলরে বলতো ফাৎলা ডাইল। বিকালে ক্যাফের কর্ণারের বিড়ির দোকান বন্ধ হইয়া গেলে পলাশী থাইকা বিড়ি আইন্না দিত। আর শাহাদাৎ-এর কাছে তাসের পেটি থাকতো দুই তিনটা। আমাগো ইমার্জেন্সীতে সাপ্লাই দিতো।


টু-ওয়ান-এর এক্সাম দিয়া বন্ধের পর ক্যাফেতে আইসা শুনি বৃষ্টিতে বৈদুতিক তার ছিড়া শক পাইয়া শাহাদাৎ মারা গ্যাছে। বন্ধের সময় বাড়ি গেছিলো। আমরা সবাই অনেক কষ্ট পাইলাম। টু-ওয়ানে সিভিল ডে কইরা কিছু গেন্জি আছিলো আমার কাছে। ভাবছিলাম হেরে দিমু কিন্তু দেয়া হয় নাই। আমি এখনো বুয়েটের ক্যাফেতে ডাইল সামনে দেখলে শাহাদাৎ-রে মনে পড়ে......লুঙ্গি, সাদা ময়লা শার্ট, পেটের কাছে দুইটা বোতাম লাগানো,
-ছার ফাৎলা ডাইল লাইগবো।

ক্যাফের ক্রিকেট:

ওয়ান ওয়ানে ঢুকার পর যাগো লগে খাতির হইছে তার প্রাইমারী শুরু হইলো ক্যাফের ক্রিকেট দিয়া। আমারা এ সেকশন আর সি সেকশনের মধ্য তখন তুমুল ম্যাচ চলে। ১ টায় কেলাস শেষ আর আড়াইটায় সেশনালের মধ্যে খেলা হইতো। পিছে প্লাস্টিক চেয়ার দিয়া স্টাম্প বানানো হইতো, এখনো হয়।প্রথম দিকে সবার কি জোস। সবাই খেলতে নাইমা প্রথম প্রথম ক্লাসিক শট খেলতে চাইতো। আর ক্লাসের মেয়েগো দুই একটা উপস্থিত থাকলে তো কথাই নাই। কলার উঁচা হইয়া যাইতো। রানআপ হইতো সিভিল বিল্ডিং-এর পাদদেশ থাইকা।

পরে বুঝলাম এইখানে ক্লাসিক শটের বেইল নাই, হাবলা বাড়ি সিষ্টেম। দেখা গেল সব স্মার্ট ব্যাটসম্যাট আউট হইয়া লোয়ার অর্ডার ভোদাই পোলাডা আন্দাগুন্দা বাইড়াইয়াই ব্যাপক রান করতাছে আর মায়া গো হাততালি পাইতাছে।

বল মাঝে মাঝে অডিটোরিয়ামে আটকাইতো। শাহাদাৎ (পোলাডা কামের আছিলো) নামায় দিতো।

অফটপিক: ক্যাফেতে আমার একটা হ্যাট্রিক আছে।:)

চলবে......

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন