সোমবার, ১ ডিসেম্বর, ২০০৮

আজিকের টি এস সি ভ্রমন.................

সকালে উঠিয়াই নীলক্ষেত যাইতে হইবে ভাবিয়া মনটা ব্যাজার ছিলো। সারারাত নেট খেলিবার পর সকালে ঘুম থাকিয়া উঠা একটু বেদনাদায়কই বটে। তবুও মোবাইলে তীক্ষ্ণ এলার্ম বাজাইয়া উঠিলাম। ঘুমন্ত চোখে প্রাকৃতিক কার্য সারিয়া, দুটি মুখে দিয়াই বাহির হইলাম।

রাজপথে আসিয়া দেখি কাহারু, সময় সকাল ৯ ঘটিকা। আজিকা মনে হয় ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে খ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা। বাসে পুরাই তো কাহারু। তারপরেও উপূর্যপরি শক্তিপ্রয়োগ করিয়া বাসের গেটে বিপদজ্জনক ভাবে ঝুলিয়া নীলক্ষেতে পৌছাইবার পর মনে হইলো, এমনি করিয়া নিত্যদিন যাতায়াত করিলে ৩২-এর শতায়ু সংঘের সাহিত যোগ ব্যায়ামের প্রয়োজন নাই।
(বিরতী........)

ইতিমধ্যেই আমার শুভাকাঙ্খী ফোন করিয়া জানাইলেন আজ নাকি টি এস সি তে কনসার্ট আছে। আমি পেনাং এ টাকিমাছের ভর্তা, চালকুমড়া ভাজি, ডাল সহকারে চারি প্লেট ভাত গলঃকরন করিত, বেনসন ফুকিতে ফুকিতে হৃষ্টচিত্তে টি এস সিতে গিয়া পৌছাইলাম। তখন বিকাল চার ঘটিকা। অর্থনৈতিক সংকটে থাকার দরুন উন্নতমানের আমিষ লইতে পারি নাই।

ঢাকা ভার্সিটির নারীগন আমার হৃদয়ে অনেক পূর্বাভাগ হইতেই দোলা দেয়।বুয়েটে অধ্যয়নের দরুন ঢাকা ভার্সিটির প্রমিলাদের সংস্পর্ষ অনেকটা অধরাই রহিয়া গ্যাছে। টি এস সি একটি অদ্ভুত বৈচিত্রময় জায়গা বলিয়া আমার কাছে বোধ হয়। খোলা মাঠে বসিয়া কি রকম উচ্ছল আড্ডা চলিতেছে!! কোথাও কতিপয় বালক বালিকা গোল হইয়া বসিয়া নাটকের মহড়া করিতেছে, কবিতা পাঠ করিতেছে। কোথাও বা সবাই হাতে তালি দিয়া গান করিতেছে। কোথাওবা দেয়ালে হেলান দিয়া দুই কপোত কপোতি ভাব-ভালোবাসা করিতেছে। আর এরিমাঝে কতিপয় বালক তিনপাত্তি খেলিতেছে, আর ধুম্রপান করিতেছে। যদিও টি এস সি অভ্যন্তরে ধুমপান নিষেধ।

কনসার্টটা জমিলো না। আসলে ইহা কনসার্ট না।যে শুভাকাঙ্খী ফোন করিয়া জানাইলেন আজ টি এস সি তে কনসার্ট আছে, তাহাকে একচোট লইলাম। ক্লোজআপ ওয়ানের গায়ক গায়িকা আনিয়া এইটি একটি সাংস্কৃতিক সন্ধ্যামাত্র।

আজ পহেলা ডিসেম্বর এইডস দিবস বলিয়া সবাই কে "নিজেকে জানো" বলিয়া একটি যৌনশিক্ষার একটি পুস্তিকা ধরাইয়া দেয়া হইতেছিলো। আমি ও একটা বহি পাইয়া তাহা গভীর মনোযোগের সহিত পর্যবেক্ষন করি। এতে অনেকেই আমার দিকে অদ্ভুত নজরে তাকাইতেছিলো।

জলত্যাগের জন্য টি এস সির দোতালায় উঠিয়া দেখিলাম বেশ দীর্ঘ লাইন। একটি ছোটরুমের আবার ছিটকানি নাই। গলা খাকারি দিয়া কাজ করিতে হয়। আমোদ পেলুম।

দোতালায় আশেপাশের রুমে উকিয়া মরিয়া দেখিলাম, গোটা ছয়েক যুবক যুবতী একই তালে ডায়লগ বলিতেছে এবং গোল হইয়া লঘু পায়ে ঘুরিতেছে। একজন বাবরী চুলের বালক খরতাল জাতীয় কি জানি বাজাইতেছে। একজনের হাতে গিটারও দেখিলাম। বুঝিলাম ইহারা সংস্কৃতি কর্মী। আমি লজ্জিত মুখে কিয়ক্ষন উঁকি মারিয়া চলিয়া আসলাম..............................

তবে আড্ডাটা ভালোই জমিয়াছিলো এবং ঢাকা ইউনিভার্সিটির বন্ধুদের সৌজন্যে প্রচুর বিড়ি ও চা পান করে সময়টা আনন্দমুখর ভাবেই কাটাইয়াছি। আর ঢাকা ভার্সিটির নারীগন এবারো আমাকে হতাশ করে নাই।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন